মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩২ পূর্বাহ্ন

সাদুল্লাপুরে চড়া দামে ধান চারা কিনে বিপাকে কৃষকরা

সাদুল্লাপুরে চড়া দামে ধান চারা কিনে বিপাকে কৃষকরা

সাদুল্লাপুর প্রতিনিধি: সাদুল্লাপুর উপজেলা জুড়ে পুরোদমে শুরু হয়েছে রোপা আমন চারা রোপণের কাজ। তবে নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা চারা সংকটে পড়ছেন। আর উঁচু এলাকার কৃষকের উদ্বৃত্ত চারাগুলো হাটে তোলা হলেও তা দাম নেওয়া হচ্ছে বেশি। প্রতিপোন চারা (২০ গোন্ডা) কেনাবেচা হচ্ছে- ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দামে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন বলে চারা ক্রেতাদের অভিযোগ। সম্প্রতি সাদুল্লাপুর ও মীরপুর ও ধাপেরহাটে গিয়ে দেখা গেছে- আমন ধানচারা অধিক দামের কেনাবেচার দৃশ্য। এসময় বেশ কিছু দালাল চক্র কৃষকদের চারা কেনাবেচা করে দেওয়ার নামে পকেটস্থ করছে টাকা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় থেকে জানানো হয়, গত রোপা আমন মৌসুমে ১৫ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ৩৩০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪০৫ হেক্টর অর্জন হয়েছে। আর ১ হাজার ৬১ হেক্টর বীজতলার উৎপাদিত চারা দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার কথা। নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা আমন ধান আবাদ করলেও তারা কখনও চারা উৎপাদন করেন না। উঁচু এলাকার কৃষকদের উদ্বৃত্ত চারা কিনে রোপণ করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার নিম্নাঞ্চলের কৃষকদের চাহিদা বেশি হওয়ায় হাট-বাজারে চারার দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার হাট-বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, উঁচু এলাকার কৃষকরা রিকশাভ্যান ও বাইসাকেল যোগে বস্তাভর্তি করে ধানের চারা এনে ওইসব হাটে বিক্রি করেছেন। আর ক্রেতারা মান যাচাই ও জাত নির্ণয়ে চাহিদা মতো চারা কিনছেন। রীতিমত সেখান থেকে অধিক দামে চারা কিনে নিয়ে জমিতে রোপণ করছেন।
ধাপেরহাটে চারা বিক্রেতা আব্দুল মোমিন বলেন, আমার জমির বীজতলায় চারা উৎপাদন করা হয়। নিজের জমিতে চারা লাগানো হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত ৬ পোন চারা ৫ হাজার ৬০০ হাজার টাকায় হাটে বিক্রি করলাম। যার এই এছাড়া প্রতিপোন চারা বিক্রি বাবদ ২৫ টাকা হারে ইজারাদারকে দিতে হয়েছে।
মহিষবান্দি এলাকার চারা কিনতে নবির উদ্দিন বলেন, এ বছরে ৩ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান আবাদের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। আমরা কখনও চারা উৎপাদন করি না। উঁচু এলাকা থেকে চারা কিনে আবাদ করে থাকি। এ বছর প্রতিপোন চারা ১ হাজার ৫০ টাকা দরে কিনেছি। গত বছরের প্রতিপোন চারার দাম ছিল ৩০০ টাকা। এবছর চারার দাম তিনগুন হওয়ায় চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব না।
নিজের জমি না থাকায় প্রতিবেশী এক ব্যক্তির ২ বিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন বলে জানালেন কৃষক জহুরুল খান। সেই জমিতে রোপন করতে ৬ হাজার টাকা দিয়ে চারা কিনেছেন। এভাবে চড়া দামে চারা-সার কিটনাশক কিনে আবাদ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব ভট্রাচার্য্য জানান, এ বছর নিম্নঞ্চলের কৃষকদের চাহিদা বেশি থাকায় হাটে অধিক দামে চারা বিক্রি হচ্ছে। তবে কৃষকদের লাভবান করতে চলতি মৌসুমে ৩ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তাদের ভালো ফলন পেতেও সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com